জিজ্ঞাসা (৪৪): মানুষের ভাগ্যে যেটা লেখা আছে সেটা কি হবেই না এটা পরিবর্তনশীল আমি কিছুটা পড়াশুনা করি তবুও কেন জানি আমি পরীক্ষা ভালো দিতে পারি না কিন্তু আমার কিছু বন্ধু আছে যারা একদম পড়াশুনা করে না কিন্তু পরীক্ষা ওদের ভালো হয় এটা কি ওদের ভাগ্যের লিখন মানুষের কর্মের কারণে কি মানুষের রিয্ক পরিবর্তন হবে? [মোহাম্মাদ রবি, রংপুর]
জবাব: যার ভাগ্যে যেটা আছে, সে সেটাই পাবে। এতে কোনো পরিবর্তন হয় না। তবে ভাগ্যের লেখাটা পরিশ্রমের মাধ্যমে অর্জন করতে হয়। এটাই আল্লাহর সৃষ্টিগত বিধান। যার ভাগ্যে সন্তান লিখা আছে, তাকে বিবাহ করে এবং স্ত্রীর সাথে সহবাস করার মাধ্যমে সন্তান অর্জন করতে হবে। বিবাহ না করে এই কথা বলে বসে থাকা নির্বোদ্ধিতার পরিচয় যে, ভাগ্যে থাকলে সন্তান হবেই, যদিও আমি বিবাহ না করি, ভাগ্যে থাকলে রিয্ক এমনিতেই পাবো, পরীক্ষায় পাস এমনিতেই করবো। এগুলো কোনো বুদ্ধিমানের কথা হতে পারে না। তাকদীরের প্রতি ঈমান বলতে এটা বুঝায় না। যারা পরিশ্রম না করে ভাগ্যের লিখার উপর ভরসা করে বসে থাকে, তারা আসলে তাকদীরের মাসআলাটি বুঝতে ভুল করেছে। তারাই সবচেয়ে হতভাগ্য হয়। ইসলাম কর্মের প্রতি উৎসাহ দিয়েছে। সাহাবীগণ তাকদীরের প্রতি ঈমান আনয়ন বলতে এটাই বুঝেছেন। তারা বুঝেছেন যে, ‘আমল করতে হবে। অতঃপর ফলাফল অর্জনের ক্ষেত্রে আল্লাহর উপর আশা রাখতে হবে। পশু-পাখি, জীব-জন্তু ও মানুষ সবার রিয্ক নির্ধারিত। পাখি তার বাসা থেকে উড়াল দিয়ে বের হয়। সে তার রিয্কের সন্ধানে ঘুরে বেড়ায়। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাকে রিয্ক দেন। মানুষের ক্ষেত্রেও তাই। তারা কাজ করবে, পরিশ্রম করবে। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাদেরকে সম্মানজনক রিয্ক দিবেন। এটাই আল্লাহর নির্ধারিত রীতি। জান্নাত ও জাহান্নাম লিখা আছে। তবে জান্নাতিরা জান্নাতে যাওয়ার কাজ করবে। এর মাধ্যমে তাদের জন্য জান্নাত লিখা আছে। জাহান্নাম লিখা আছে। সেই সঙ্গে জাহান্নামে যাওয়ার ‘আমলও নির্ধারিত আছে। যারা জান্নাতে যাওয়ার ‘আমল করবে, তারা জান্নাতে যাবে। আর যারা জাহান্নামে যাওয়ার ‘আমল করবে, তারা জাহান্নাবে যাবে।
আর আপনি কিছুটা লিখাপড়া করে ভালো রেজাল্ট করতে পারেন না। আপনি ঠিকই বলেছেন। বেশি বেশি লেখাপড়া করুন এবং মহান আল্লাহর কাছে ভালো ফলাফলের জন্য দু‘আ করুন। ইন্শা-আল্লাহ এতে রেজাল্ট ভালো হবে। তারপরও যদি কোনো কারণবশত রেজাল্ট ভালো না হয়, তাহলে তাকদীরের প্রতি বিশ্বাস করবেন। মনে করেবন, আল্লাহ তা‘আলা এটাই আপনার জন্য নির্ধারণ করেছেন এবং তা মহান আল্লাহর নির্ধারণ হিসেবে সহজভাবে মেনে নিবেন। তাকদীরের প্রতি কোনোরূপ বিরক্তি প্রকাশ করবেন না। বিশ্বাস করবেন, এর মধ্যেও মহান আল্লাহর কোনো কোনো হিকমত রয়েছে। (মহান আল্লাহই সর্বাধিক অবগত)